অশ্বথ এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন বৈজ্ঞানিক নামঃপরিবারঃইংরেজি নামঃ পরিচিতি অশ্বথ বটের ন্যায় বিরাটাকৃতি মহীরুহ। বিশাল শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট শীর...
অশ্বথ এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন
বৈজ্ঞানিক নামঃপরিবারঃইংরেজি নামঃ
পরিচিতি
অশ্বথ বটের ন্যায় বিরাটাকৃতি মহীরুহ। বিশাল শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট শীর্ষ ছত্রাকৃতি, বাকল ধূসর বর্ণ এবং বৃন্ত লম্বা, পাতা পাতলা চমড়ার মতো, বৃন্তদেশ হৃৎপিণ্ডাকৃতি, পাতার শীর্ষদেশ লম্বা লেজবিশিষ্ট। যা অন্য কোনো পাতায় অনুপস্থিত। ফুল বটের ন্যায়, ফল গোলাকার, পাকলে লাল বর্ণ থারণ করে। গ্রীষ্মকালে ফুল ও বর্ষকালে ফল পাকে।অশ্বথ বীজও বটের ন্যায় পাখির সাহায্যে ছড়ায়, ভাঙাবাড়ির ফাটলে বা কারনিসে অশ্বথের চারা জন্মাতে। অশ্বথ হিন্দ ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নিকট পবিত্র বৃক্ষ। বট ও অশ্বথ গাছ কাছাকাছি রোপণ করে বিয়ে দেওয়ারও রেওয়াজ আছে হিন্দুদের মধ্যে।
বিস্তৃতি
শ্রীলঙ্কা, ভারত ও বাংলাদেশ এর আদি নিবাস। শ্রীলঙ্কায় খ্রিষ্টপূর্ব ২৮৮তে রোপিত অশ্বথ আজো জীবন্ত। সমগ্র পৃথিবীতে এর পরিবার ৬০০টি প্রজাতি বিদ্যমান। যার মধ্যে ১২২টি এই ভারতবর্ষে বর্তমান।
ঔষধি গুণ
১। পুরুষদের বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন ধরনের আচরণ থাকে। আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে অর্থাৎ প্রাপ্তবয়সে যদি প্রৌঢ়ের মতো ইন্দ্রিয়শৈথিল্য দেখা দেয় তবে অশ্বথ গাছের গোড়া খুঁড়ে আঙুল সাইজের ৩/৪টি শিকড় কমল কাট করে খেজুর বা তাল রসের মতো রস সংগ্রহ করতে হবে এবং রসের দেড় চা চামচ করে সকাল বিকাল দু’বার অল্প দুধ মিশিয়ে খেতে হবে। এতে স্বাভাবিকতা ফিরে পাবেন।
২। অশ্বথের অবিকশিত মুকুল ৩/৪টি অল্প পানিসহ কেটে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে স্বপ্নদোষ দূর হয়। তবে এজন্য সর্বঙ্গে প্রয়োজন মনের স্বস্তি বা প্রশান্তি (Bhattacharia, 177)
৩। (ক) অশ্বতের সরস ছাল শুকিয়ে মিহি গুঁড়া করে তার থেকে ১ টিপ নিয়ে ৪/৫ ফোঁটা মধুর সাথে মিশিয়ে শিশুর মুখে দিলে মুখের ক্ষত শুকিয়ে যাবে। এতে বিদ্যমান ট্রানিন এ ভূমিকা পালন করে। অশ্বথের পাতা বা ছালে ট্যানিন রয়েছে। এ ট্যানিন কাটা, পোড়া, পচা-ঘা ও ক্ষত সরাতে কাজ করে। ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলে যা ইতঃপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
(খ) যে ক্ষতে প্রচুর পুঁজ জন্মে এবং যন্ত্রণা হয সেক্ষেত্রে অশ্বথের কচি পাতা ক্ষতের উপরে চাপা দিয়ে বেঁধে রাখলে পুঁজ পড়া কমে যাবে এবং যন্ত্রণার উপশম হবে।
(গ) পচা ঘা/ক্ষত শুকাচ্ছেনা বরং ধীরে ধীরে গভীর হচ্ছে, সেক্ষেত্রে অশ্বথের শুকনা ছাল (ছালের উপরের অংশ) মিহি গুঁড়া করে ঐ ক্ষতের উপর ছড়িয়ে দিলে ৩-৪ দিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে।
(ঘ) পোড়া ঘা বা ক্ষত সাধারণত সহজে শুকায় না, এক্ষেত্রে অশ্বথের ছালের শুকনো অংশ অন্তর্ধুমে পুড়িয়ে মিহি গুঁড়া করে নারকেল তেল বা ভেসলিনসহ ঐ ঘায়ে লাগালে ৩/৪ দিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে।
(ঙ) যেকোনো কারণে যোনিতে ক্ষতের সৃষ্টি হলে অশ্বথ গাছের ছাল ২৫ গ্রাম আন্দাজ ৬ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ওটা দিয়ে ঢুস দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। এভাবে একদিন অন্তর অন্তর ৩/৪ বার ব্যবহার করলে যোনির ক্ষতের সমস্যা সেরে যাবে।
COMMENTS