পারিজাত বা পালতে মান্দার এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন বৈজ্ঞানিক নাম: Erythrina variegata Linn.পরিবার: Papilionaceaeইংরেজি নাম: Indian Coral Tr...
পারিজাত বা পালতে মান্দার এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন
বৈজ্ঞানিক নাম: Erythrina variegata Linn.পরিবার: Papilionaceaeইংরেজি নাম: Indian Coral Tree
পরিচিতি
মান্দার একটি পাতাঝরা মাঝারি আকারের বৃক্ষ। ৫-৮ মিটারে উঁচু হয়। এটিকে পারিজাতও বলা হয়। ছাল পতলা ও ধূসর বা হালকা সবুজ বর্ণের। গাছের গায়ে ছোট ছোট কাঁটা থাকে। পত্রদণ্ড থেকে দু’দিকে দু’টি এবং অগ্রভাগে একটি পাতা থাকে, দেখতে অশোক পাতার ন্যায়, লম্বা ১০-১৫ সে.মি. পুষ্পদণ্ড বিস্তৃ, ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। এপ্রিল- মে মাসে গাছের পাতা ঝরে যায় তখন ফূল ফোটে, তাই এসময় এ গাছকে দূর থেকেই চেনা যায়। জুন-জুলাই মাসে ফল হয়। ফল ১-৩ সে.মি. লম্বা, প্রতি শুঁটিতে ৩-৮টি বীজ থাকে এবং দেখতে শিমের বীজের মতো।
বিস্তার
এ উপমহাদেশ পারিজাতের আদি নিবাস বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশের সব অঞ্চলে এটি দেখা যায়। এই গণে প্রজাতির সংখ্যা ১০০টি।
ঔষধি গুনাগুন
১। কোলাই ইনফেকশনজনিত কারণে মূত্রকৃচ্ছ্র হয় সাথে জ্বরও হয়ে থাকে। এর থেকে রেহাই পেতে মাদার পাতার রস ১ চা চামচ করে প্রতিদিন সকাল- বিকাল অল্প পানি মিশিয়ে হালকা গরম করে খেতে হবে। এতে ব্যকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।
২। মায়ের স্বাস্থ্য ভালো, অপুষ্টির কোনো লক্ষণ নেই; কিন্তু শিশু বুকের দুধ পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে ২ চা চামচ মাদার পাতার রস ৩/৪ চা চামচ নারিকেল দুধে মিশিয়ে সকালের দিকে কয়েকদিন খেতে হবে। এতে শিশুর স্তনের দুধের অভাব হবে না।
৩। শীতের প্রকোপে বাতজনিত কারণে ঘাড়ের সাথে হাতের জোড়া শক্ত হয়ে যায়, ফলে হাত ঘোরানো এমনকি উঁচুতে ওঠানো সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে মাদার গাছের মূলের ছালের রস ৩০/৪০ ফোঁটা করে কয়েকদিন নাক দিয়ে ড্রপ আকারে দিতে হবে, যাতে গলায় চরে যায়। এত করে কিছুদিনের মধ্যেই উপকার অনুভব হবে। আবার গেঁটেবাতে মাদার পাতা বেটে ফোলা স্থানে প্রলেপ দিলে উপশম হয়।
৪। মহিলাদের মাসিকের সমস্যায় মাদার পাতার রস কার্যকর। সময় কিছুটা হয়েছে, কিন্তু মাসিক বন্ধ, মেনোপজ হওয়ার সময় হয় নি, অথচ বেশি বেশি স্রাব হয়, যেন মাসিক বন্ধ হওয়ার পূর্বাবস্থা। এমন হলে ঐ বিশেষ সময়ে ৩/৪ দিন ২ চা চামচ মাদার পাতার রস একটু গরম করে সকাল-বিকাল খেতে হবে। এভাবে শুধু ঐ সময়ের জন্য ২/৩ মাস খেলে ওটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
৫। আবার মাসিকের প্রথম প্রথম অভিজ্ঞতা ভালো নয়, স্রাবের পরিমাণ অল্প তদুপরি সুচ ফোটানো যন্ত্রণা। প্রতি মাসেই বেদনানাশক বড়ি খেতে হয়। এমন অবস্থায় ২ চা চামচ পাতার রস ঐ ৩/৪ দিন খেলে যন্ত্রণার উপশম হবে।
৬। রক্ত আমাশয়ের প্রথম দিকেই ব্যবস্থা নেওয়া ভালো, কারণ ২/৩ দিনের মধ্যেই এটি শরীর পর্যুদস্ত করে ফেলে। তাই এক্ষেত্রে মাদার ছালের ২ চা চামচ রস ৩/৪ চা চামচ দুধে মিশিয়ে ২/৩ দিন খেলে রক্ত আমাশয় দূর হবে।
৭। চর্মরোগে (Skin Disease) মাদার পাতা খুব কার্যকর, তাই কুঁচকিতে বাগি হলে তার যে কী অসহ্য যন্ত্রণা ভুক্তভোগীই জানে। এ অবস্থায় পাতা বেটে ঐ স্থানে প্রলেপ দিলে ২/৩ দিনের মধ্যেই যন্ত্রণা ও টাটানি চলে যাবে।
৮। যে কোনো ধরনের জ্বর সারাতে মাদার পাতার ভূমিকা স্বীকৃত। তাই শরীর রসস্থ হয়ে যে জ্বর চোখমুখ ঝাপরে আসে তা সারাতে গাছের ছালের রস এক চা চামচ প্রতিদিন সকাল-বিকাল দু’বার অল্প পানিতে মিশিয়ে হালকা গরম করে একটু মধু মিশিয়ে খেতে হবে; এতে ২/৩ দিনের মধ্যে জ্বর ছেড়ে যাবে।
Chemical Composition
Leaves & Bark contian- (a) alkaloids- erysotrine, erysodine, erysovine (b) erythrinine (Phytochem, 1970) (c) Saponin (d) Waxy materials (Bhattacharia, 1978).
COMMENTS