বৈজ্ঞানিক নাম: Solanum surattense Bum. f.syn. S. Xanthocarpumপরিবার: Solanaceaeইংরেজি নাম: Yellow Berried Nightshade পরিচিতি: অঞ্চলভেদে কন্ট...
বৈজ্ঞানিক নাম: Solanum surattense Bum. f.syn. S. Xanthocarpumপরিবার: Solanaceaeইংরেজি নাম: Yellow Berried Nightshade
পরিচিতি:
অঞ্চলভেদে কন্টিকারিকে কন্টিকারিকা বা কন্টকিনি বলা হয়। এটি ঘন কন্টকময় ভূলুন্ঠিতা গুল্ম । মাটিতে গড়িয়ে এটি ছত্রাকারে বেড়ে চলে। শাখা-প্রশাখা এমনকি পাতাও কন্টকময় বলে এটিকে কন্টিকারিকা বলে। পাতা ১০-১২ সে.মি. লম্বা, ৫-৭ সে.মি. চওড়া ও ডিম্বাকৃতি, মাঝ মাঝে ছেঁড়া মনে হয়। পাতা এবং শাখা-প্রশাখা সবুজ বা হলদে সবুজ রঙের হয়। নদীর চর, রাস্তার ধার ও পতিত জায়গায় দেখা যায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কন্টিকারিকা বেড়ে উঠে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ফুল ও ফল হয়। রক্তাভ নীল ফুলের আকৃতি বেগুনের মতো। কাঁচা ফল সবুজ তবে পাকলে হলুদ বা লালচে হলুদ হয়। ফলের ব্যাস ৭-৯ সে.মি. এবং প্রতি ফলে ১২০-১৪০ টি ছোট ছোট বেগুন বীজের মতে বীজ থাকে।
বিস্তার:
বাংলাদেশের সর্বত্র এটি দেখা যায়।
বীজের ওজন:
প্রতি কেজিতে ৩,৫০,০০০টি প্রায়।
বংশবৃদ্ধি:
শীতের শেষে ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে বীজ থেকে সহজেই বংশবৃদ্ধি করা যায়। বীজ বপনের ২০-৩০ দিনের মধ্যে শতকরা ৫০-৬০ ভাগ বীজ থেকে চারা গজায়।
ঔষধি গুণাগুণ:
চরক ও সুশ্রুত সংহিতায় কন্টিকারিকার কয়েকটি মুষ্টিযোগ আছে। যেমন-
১। কন্টিকারিতে Tropane alkaloid থাকায় এটি ব্যাথা-বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে (Ghani,2002)। কোমরের পিছনের দিকে ব্যাথা, সামনে নয় এবং প্রস্রাব একনাগারে না হয়ে মাঝে মাঝে বন্ধ হয় কিন্তু কোন জ্বালা-যন্ত্রনাহীন, বুঝতে হবে এটি পাথুরি রোগ। এ ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম কন্টিকারিকা ডাল এবং পাতা ৫ গ্রাম বেগুনের মূলের ৪ কাপ পানিতে সেদ্ব করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে এর সাথে ৫০ গ্রাম সাদা দই মিশিয়ে সকালে কিছু খাওয়ার পর খেতে হবে। এটা কিছুদিন খেলে পাথর ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে আপনা থেকেই বেরিয়ে আসবে।
২। কন্টিকারিকার ১০ গ্রাম ডাল ও ৩ পাতা ৮ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে অর্ধেক থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ ক্বাথ দিয়ে মুগ ডাল রান্না করে খেলে কাশির উপশম হয়।
৩। শ্বাস রোগ হলে নাকি সারানোর কোনো আশা থাকে না। কিন্তু আয়ুর্বেদ শাস্ত্র এটি মানতে রাজি নয়। তাই এসব ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম কন্টিকারিকার মূলের সাথে এক টিপ ভাজা হিংয়ের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন ওনারা। এতে শ্বাসের কষ্ট আর থাকবে না। মনে রাখতে হবে যে, শুকনো মূল কাঁচা মূলের অর্ধেক পরিমাণ হলেই চলবে।
৪। প্রস্রাবের চাপ বোধ হয় কিন্ত পরিমাণমতো হচ্ছে না, বারে বারে যেতে হয়; কিন্ত কোনো প্রকার জ্বালা-যন্ত্রণা নেই। এমন ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম কন্টিকারিকা ডালে পাতাসহ থেঁতো করে ৪ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে খেতে হবে। এতে উপকার পাবেন।
৫। শ্বাস রোগ কঠিন হলে হাঁপানিতে রুপ নিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে কন্টিকারিকা গাছ ফলমূলসহ ২৫০ গ্রাম থেঁতো করে ২ লিটার পানিতে সেদ্ধ করে আধা লিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে ক্বাথ আলাদা করে আবার জ্বাল দিয়ে ঘন চিটাগুড়ের মতো করতে হবে। এখন ঐ ঘন ক্বাথের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে সকাল থেকে ৪/৫ বার একটু একটু করে চেটে ৫/৬ দিন খেতে হবে। এতে হাঁপের টান এবং কাশি থাকলেও উপশম হবে।
৬। হাটবাজারে ফেরিওয়ালার এক প্রাকার বাতের বর্ণনা দিয়ে থাকেন। গেঁটেবাত তার মথ্যে একটি। গাঁটে গাঁটে ব্যথা ও ফোলা তাই গেঁটেবাত। এমন হলে কন্টিকারিকা এবং সজনের ছাল সমপরিমাণ নিয়ে ছেঁচে একটু গরম করে ফোলা জায়গায় প্রলেপ দিতে হবে। এতে উপকার পাওয়া যাবে।
৭। কন্টিকারিকার মূল ২/৩ গ্রাম আন্দাজ ছেঁচে তার সাথে ২৫০ মি.লি. ছাগলের দুধ ও সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে ঐ দুধ ব্যবহার করলে চোখ ওঠা ২/১ দিনের মথ্যেই সেরে যাবে।
৮। কন্টিকারিতে ১% alkaloid আছে তাই এটি sex hormone তৈরির উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে (IJP, 1958)।
Chemical Composition
(a) Carpesterol (b) glycosidal alkaloids (c) solasonine, diosgenin, semidrying oil, fatty acids (Bhattacharia, 1977).
COMMENTS